ভোলায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় বর্ষ বরণের বৈশাখী আয়োজনে পান্তা ইলিশ খাওয়ার রেওয়াজ বাদ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ অঞ্চলে পান্তা ইলিশ খাওয়ার ওপরই নিষেধাজ্ঞারোপ করা হয়েছে।
বর্ষ বরনের প্রস্তুতি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে রোববার জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিম রেজা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, হাজার বছরের বাঙালির ঐতিহ্যের নববর্ষকে বরণ করতে এক সময় পান্তা ইলিশ খাওয়ার রেওয়াজ ছিল। যেহেতু ইলিশ মাছ রক্ষা করতে হবে। জাটকা ইলিশ বড় করার সুযোগ দিতে হবে। তাই পান্তা ইলিশ খাওয়া চলবে না। বরং ইলিশের স্থলে পান্তা পেঁয়াজোসহ নানা আয়োজন থাকতে পারে।
ভোলায় ৩ দিনের আয়োজনের প্রথম সূর্যদয়ে প্রভাতি গানে গানে বরণ পর্ব শুরু হবে। এর পর বর্নাঢ্য র্যালী। তার পরই পান্তা পেঁয়াজো সঙ্গে নানা রকমের ভর্তা ও সুকনো পোড়া মরিচ থাকছে ম্যান্যুতে। সকালে পান্তা খাওয়ার মেন্যুতে আর ইলিশ থাকছে না। এটা সকলের পালন করা প্রয়োজন। এ নির্দেশ প্রতি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদেরও দেয়া হয়েছে।
ভোলাসহ উপকূলীয় ৬ জেলার ৩২০ কিলোমিটার এলাকাকে ইলিশের অভয়স্থল গড়ে তুলতে মার্চ এপ্রিল দু মাস মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। এখন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ভোলার ইলিশা এলাকা থেকে মেঘনা নদীর চর পিয়াল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার, ভোলার ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালীর চর-রুস্তমের তে^তুলিয়া নদীর ৯০ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে। এ ছাড়া ভোলার ভেদুরিয়া সীমানা থেকে হিজলা উপজেলার রয়েছে ৩০ কিলোমিটার এলাকা। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কেউ কেউ ইলিশ কিনছে বলেই জেলেরা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জাল ফেলতে, ইলিশ ধরতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এসব ইলিশ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভোলার জেলা প্রশাসক ইলিশ কেনা থেকে সকলকে বিরত থাকতেও অনুরোধ জানিয়েছেন। এদিকে নববর্ষকে সামনে রেখে ভোলাতেও ইলিশের দাম কয়েকগুন বেড়ে গেছে। এক কেজির ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে ৪ হাজার টাকা দরে। জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে হালি এক হাজার টাকা।
ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির উপজেলা কমিটির সম্পাদক আলাউদ্দিন জানান, অভাবের টানে বাড়তি আয়ের আশায় জেলেরা নদীতে জাল ফেলতে বাধ্য হচ্ছে। জেলেরা অবশ্য ৭ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার মল্লিাক জানান, এমন কোন সুযোগ দেয়া সম্ভব নয়। পয়লা বৈশাখেও ইলিশ ধারা যাবে না। কেনা ও খাওয়াও নিষিদ্ধ।